শিল্পকলার যে বিভাগে ক্যালিগ্রাফি চর্চা করা হয়, তার নাম হচ্ছে প্রাচ্যকলা। প্রাচ্যকলা নামের ভেতর আছে আমাদের একান্ত পরিচয়। প্রাচ্য অর্থাৎ এশিয়া অঞ্চলের স্বকিয় শিল্পের নাম প্রাচ্যকলা। প্রাচ্যকলায় দুটি প্রধান হাতিয়ার দিয়ে ক্যালিগ্রাফি শিল্পকর্ম করা হয়, কলম ও তুলি, পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো অর্থাৎ চিন-জাপানে ক্যালিগ্রাফি বা সুডো করা হয় বিশেষ নিয়মে তৈরি তুলি দিয়ে, প্রকৃতি বা নিসর্গ কিংবা যে কোন চিত্রাংকনে ক্যালিগ্রাফি আসে গৌণ হয়ে। অন্যদিকে বাংলাদেশ-ভারত থেকে এশিয়ার পশ্চিমাংশের দেশগুলোতে কলম দিয়ে ক্যালিগ্রাফি প্রধানত করা হয়। এসব শিল্পকর্মে ক্যালিগ্রাফি মুখ্য হয়। বিশেষ করে আরবি ক্যালিগ্রাফিতে হরফের কারুকাজ উপস্থাপন আঙ্গিকে কলম চালনাই মুখ্য। বাংলার প্রাচ্যকলায় ক্যালিগ্রাফির উত্তরাধিকার এসেছে মোগল মিনিয়েচারের ঐতিহ্য থেকে, অবন ঠাকুর মোগল মিনিয়েচারের আদলে বহু চিত্র একেছেন, সেগুলোতে বাংলা ক্যালিগ্রাফি তিনি হুবহু মোগল মিনিয়েচারের নাস্তালিক শৈলির বাংলা রূপে করেছেন। এভাবে বাংলার প্রাচ্যকলায় ক্যালিগ্রাফির ভিন্ন মাত্রা জনপ্রিয় হয়। সেখান থেকে প্রাচ্যকলায় বাংলা ক্যালিগ্রাফি না না ঢং ও রূপবৈচিত্র নিয়ে এগিয়ে চলেছে। এবার ৩য় জাতীয় প্রাচ্যকলা প্রদর্শনিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্যালিগ্রাফি এসেছে, ওরিয়েন্টাল আর্ট সোসাইটির সেক্রেটারি ও প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান ফকিরের এক্রিলিকে করা ক্যালিগ্রাফিটি মোগল মিনিয়েচারের অর্গল ভেঙ্গে সম্পূর্ণ নতুন ধারায় আত্ম প্রকাশ করেছে, এছাড়া অপরাপর কয়েকজন শিল্পি নিরীক্ষাধর্মী ক্যালিগ্রাফি করে প্রদর্শনির বৈচিত্র ও সমৃদ্ধিকে সফল এবং সার্থক করেছেন। প্রদর্শনিতে আরবি হরফে দুটি ক্যালিগ্রাফি বাংলার সুলতানি ঐতিহ্য স্মরণ করিয়ে দেয়, প্রাচ্যকলায় বাংলার অতীত ঐতিহ্যের শেকড় কত গভীরে প্রোথিত তা এ ক্যালিগ্রাফির উপস্থাপনে ফুটে উঠেছে। প্রদর্শনি সফল ও সার্থক হোক, এ কামনা করি।
Saturday, November 18, 2017
বাংলাদেশের প্রাচ্যকলায় ক্যালিগ্রাফি চর্চা
শিল্পকলার যে বিভাগে ক্যালিগ্রাফি চর্চা করা হয়, তার নাম হচ্ছে প্রাচ্যকলা। প্রাচ্যকলা নামের ভেতর আছে আমাদের একান্ত পরিচয়। প্রাচ্য অর্থাৎ এশিয়া অঞ্চলের স্বকিয় শিল্পের নাম প্রাচ্যকলা। প্রাচ্যকলায় দুটি প্রধান হাতিয়ার দিয়ে ক্যালিগ্রাফি শিল্পকর্ম করা হয়, কলম ও তুলি, পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো অর্থাৎ চিন-জাপানে ক্যালিগ্রাফি বা সুডো করা হয় বিশেষ নিয়মে তৈরি তুলি দিয়ে, প্রকৃতি বা নিসর্গ কিংবা যে কোন চিত্রাংকনে ক্যালিগ্রাফি আসে গৌণ হয়ে। অন্যদিকে বাংলাদেশ-ভারত থেকে এশিয়ার পশ্চিমাংশের দেশগুলোতে কলম দিয়ে ক্যালিগ্রাফি প্রধানত করা হয়। এসব শিল্পকর্মে ক্যালিগ্রাফি মুখ্য হয়। বিশেষ করে আরবি ক্যালিগ্রাফিতে হরফের কারুকাজ উপস্থাপন আঙ্গিকে কলম চালনাই মুখ্য। বাংলার প্রাচ্যকলায় ক্যালিগ্রাফির উত্তরাধিকার এসেছে মোগল মিনিয়েচারের ঐতিহ্য থেকে, অবন ঠাকুর মোগল মিনিয়েচারের আদলে বহু চিত্র একেছেন, সেগুলোতে বাংলা ক্যালিগ্রাফি তিনি হুবহু মোগল মিনিয়েচারের নাস্তালিক শৈলির বাংলা রূপে করেছেন। এভাবে বাংলার প্রাচ্যকলায় ক্যালিগ্রাফির ভিন্ন মাত্রা জনপ্রিয় হয়। সেখান থেকে প্রাচ্যকলায় বাংলা ক্যালিগ্রাফি না না ঢং ও রূপবৈচিত্র নিয়ে এগিয়ে চলেছে। এবার ৩য় জাতীয় প্রাচ্যকলা প্রদর্শনিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্যালিগ্রাফি এসেছে, ওরিয়েন্টাল আর্ট সোসাইটির সেক্রেটারি ও প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান ফকিরের এক্রিলিকে করা ক্যালিগ্রাফিটি মোগল মিনিয়েচারের অর্গল ভেঙ্গে সম্পূর্ণ নতুন ধারায় আত্ম প্রকাশ করেছে, এছাড়া অপরাপর কয়েকজন শিল্পি নিরীক্ষাধর্মী ক্যালিগ্রাফি করে প্রদর্শনির বৈচিত্র ও সমৃদ্ধিকে সফল এবং সার্থক করেছেন। প্রদর্শনিতে আরবি হরফে দুটি ক্যালিগ্রাফি বাংলার সুলতানি ঐতিহ্য স্মরণ করিয়ে দেয়, প্রাচ্যকলায় বাংলার অতীত ঐতিহ্যের শেকড় কত গভীরে প্রোথিত তা এ ক্যালিগ্রাফির উপস্থাপনে ফুটে উঠেছে। প্রদর্শনি সফল ও সার্থক হোক, এ কামনা করি।
জুমাবারের ক্যালিগ্রাফি ক্লাসের উন্মুক্ত আলোচনা : প্রথম পর্ব
প্রায় প্রতি সপ্তায় ক্লাস শেষে ইরাদা হয়, আলোচনাটা লিখে ফেলি, তাতে ক্যালিগ্রাফি সংশ্লিষ্টদের কিছু ফায়দা হতে পারে। আজ তাই আলোচনার সদর মোকামগুলো তুলে ধরার কোশেশ করব, ইনশা আল্লাহ।
ক্যালিগ্রাফি যেকোন ভাষার হরফে হতে পারে। আমরা বাংলাভাষী, বাংলাভাষার নিজস্ব হরফ আছে, বাংলা লিপি এর নাম। আঞ্চলিক অনেক ভাষা এলিপিতে লেখা হয়। এসব ভাষার মধ্যে কিছু জীবন্ত আর আছে মৃত ভাষা। মৃত এমন একটি ভাষার নাম হচ্ছে সংস্কৃত। এভাষায় পৃথিবীর কেউ এখন কথা বলে না। কিন্তু বাংলালিপিতে এভাষায় প্রচুর সংখ্যক কিতাব বই লেখা হয়েছে। বাংলালিপির জন্ম যেখানেই হোক না কেন, এর উৎকর্ষ, দলাই-মালাই, লালন-পালন, আদর-কদর হয়েছে মুসলমানদের হাতে। এজন্য একটা সময় পর্যন্ত এটা ব্রাহ্মন্যবাদিদের কাছে ঘৃনার ও অচ্ছ্যুত অপবিত্র বলে গন্য হত। এর প্রকাশ তারা করেছিল, ক-অক্ষর গোমাংশ বলে। গোমাংশ স্পর্শ যেমন তাদের কাছে জাত চলে যাবার মত বিষয়, গোহত্যা যেমন মহাপাপ, ক অক্ষর অর্থাত বাংলালিপিও তেমনি মুসলমান স্পর্শে জাত হারিয়ে অপবিত্র অচ্ছ্যুত হয়ে গেছে। তাই প্রাচীন সংস্কৃত ভাষার কেতাবাদি বাংলা হরফে লেখা হলেও তা একসময় নাগরি লিপিতে লেখা হতে থাকে। যদিও নাগরি লিপিও সংস্কৃত ভাষার নিজস্ব লিপি নয়, বরং ধারকরা লিপি। এই লিপিকে গুরুত্ব ও পবিত্র বুঝাতে একে তারা দেবনাগরি লিপি বলে প্রচার করে। আর বাংলালিপিকে অচ্ছ্যুত বলে, বাংলাভাষাকে ম্লেচ্ছভাষা বলে হেয়জ্ঞান করে। তারপর এভাষার দখল নিতে একসময় একে সংস্কৃতের দুহিতা আখ্যা দিয়ে, ভাষার মধ্যে সংস্কৃত শব্দের বাহুল্য ব্যবহার শুরু করে। বিদ্যালয়ে এবিষয়ের শিক্ষকগণকে এমনভাবে তৈরি করা হয় যেন একটি বিদেশি দখলদার শব্দকে তৎসম তদ্ভব বলে মেষচামড়ায় আবৃত নেকড়েকে মেষপাল সাবাড় করার মওকা দেয়া। তাই আমাদেরকে বাংলালিপি ও ভাষার ইতিহাস নতুন করে লিখতে হবে।
ক্যালিগ্রাফির ভেতরকার আলোচনা পরের লেখাগুলোতে আসবে ইনশা আল্লাহ।
Subscribe to:
Posts (Atom)
Featured Post
Calligraphy Class started for Biggeners
I started new year Calligraphy Class. Today is 2nd class. Any person of no boundary on ages, can learn calligraphy, if he or she interes...
-
Mohammad Abdur Rahim's Calligraphy work তুরস্কে ওআইসি'র সাংস্কৃতিক বিভাগ রিসার্স সেন্টার ফর ইসলামিক হিস্ট্রি, আর্ট ...
-
_______3rd Part_______ In Calligraphy Arena of BANGLADESH Dedicated artistic works and contribution of Mohammad Abdur Rahi...